তারপর সেই কবিকে উলঙ্গ করা হল
তারকাটা দিয়ে পেঁচিয়ে বাধা হল হাত ও পা
শুইয়ে দেয়া হল বরফে, চালানো হল চাবুক।
কবির নামে কোন অভিযোগ নেই
থানায় কোন মামলা নেই
পুলিশের খাতায় লেখেনি কেউ জারজ অভিমান।
বুদ্ধিজীবীরা বড্ড নারাজ,
পতিতার দীর্ঘনিঃশ্বাসের মূল্যের দাবীতে
রাস্তায় নেমেছিল কবির কলম।
শেয়ালগুলো যখন বলেছিল
– চারিদিকে খালি মুরগী রে, খাওয়াটা জমবে।
ধর্ষকের দল যখন বলেছিল
– বিছানাতেই প্রিয়তমা তোমায় চেটে-লুটে-ছিবড়ে খাবো।
সারাজীবন পোড় খাওয়া মানুষটা যখন বলেছিল
– চারিদিকে বেজন্মার দল দেখি।
নীলনকশা যখন প্রমাণ করলো
গরীব মরলেই বড় বড় মাথা বাঁচবে – টাকার মালিকরা।
দাগী যখন তিন দেয়ালের ভিতর বসে গেয়েছিল –
“এ খাঁচায় রাখবে আমায় কেমন করে?”
এক পঙ্গু ভিখিরি যখন পঁচিশ বস্তা সিমেন্ট
মসজিদে দান করে বাড়ী ফিরেছিল।
এক মাতাল যখন রাস্তায় এলোপাথাড়ি হাটছিল
আর তৃতীয় বিয়ের স্বপ্ন বুনছিল।
তিন লক্ষ টাকা ঘুষ গুনে পুলিশ হয়ে
যখন নয় লক্ষ টাকা পকেটে রেখেছিল।
ডাক্তার’রা যখন গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হচ্ছিল
হাজার হাজার রোগীকে সুস্থ না করে।
নতুন বা বুড়ো হায়েনা’রা যখন
ভেঁজা লালাজিভে তাকিয়েছিল জাতির পতাকাটির দিকে,
কবি তখন বলেছিল
– শালা গণতন্ত্র পেছন দিয়েই দিলো, পেটে দিলো না কিছুই।
ইংরেজীতে বলেছিল –
This democracy sucks. Total Imbalance, Fuck off.
Our democracy is not secured.
অশ্লীল সাহিত্যচর্চার দায়ে কবির হাতে এলো হাতকড়া।
নিয়ে যাওয়া হল তাকে,
কিন্তু তারপর আর তার কোন খবর দেয়া হয়নি দেশবাসীকে।
দেশবাসীরও আগ্রহ ছিল না।
দেশবাসী নিয়ে এর আগে কবি লিখেছিলেন –
“আমার মানুষ খোল মাথা তোদের মস্তিস্ক দেখি অসুস্থ কৃমির
একবার হঠাৎ উঁকি দেয় তোদের রাজ্যের হুশ, পরমুহুর্তে সব ঠুশ
মানুষ তোরা বড্ড ভোঁদাই খালি পৈতালী মারাস, অনর্থক ফাঁপর
এক মুহুর্তে হয়ে যাস আপামর, পরক্ষণেই হোস প্রচন্ড স্বার্থপর
আমার মানুষ তোদের সমার্থক শব্দ বেশ্যা, তোরা বেশ্যার মতই ব্যস্ত
শুধু বিনিময় মানিস না।”
© Shihab Shahariare Khan ||